এতক্ষণ বিভিন্ন সময় ও বিভিন্ন স্থানে দো‘আ পড়া ও তার ফযীলত সম্পর্কে আলোচনা করা হ’ল। এক্ষণে সালাম ফিরানোর পর ইমাম-মুক্তাদীর সম্মিলিতভাবে হাত তুলে দো‘আ করা সম্পর্কে কিছু আলোচনা করার প্রয়াস পাব ইনশাআল্লাহ। প্রকাশ থাকে যে, যারা সম্মিলিতভাবে হাত তুলে দো‘আ করার প¶ে মত পোষণ করেন, তারা পবিত্র কুরআন থেকে কিছু আয়াত এবং কিছু যঈফ হাদীছ দলীল হিসাবে পেশ করে থাকেন। নিম্নে তাদের দলীল সমূহের পর্যালোচনা বিধৃত হ’ল।
কুরআন থেকে দলীল :
‘আর তোমাদের রব বলেন, তোমরা আমার নিকট দো‘আ কর। আমি তোমাদের দো‘আ কবুল করব। যারা অহংকার বশতঃ আমার দাসত্ব হ’তে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে’ (মুমিন ৬০)।
‘হে নবী! আমার বান্দারা যদি আমার সম্পর্কে তোমার নিকট জিজ্ঞেস করে, তাহ’লে তুমি বলে দাও যে, আমি তাদের নিকটেই আছি। যে আমাকে ডাকে, আমি তার ডাক শ্রবণ করি এবং তার ডাকে সাড়া দেই। কাজেই তাদের আমার আহ্বনে সাড়া দেওয়া এবং আমার উপর ঈমান আনা উচিত। তবেই তারা সত্য সরল পথের সন্ধান পাবে’ (বাক্বারাহ ১৮৬)।
(৩) ‘তোমরা তোমাদের রবকে ভীতি ও বিনয় সহকারে ডাক, নিশ্চয়ই তিনি সীমালংঘনকারীকে পসন্দ করেন না’ (আ‘রাফ ৫৫)।
(৪) ‘অতঃপর যখন অবসর পাও পরিশ্রম কর এবং তোমার পালনকর্তার প্রতি মনোনিবেশ কর’ (ইনশিরাহ ৭-৮)। উপরোক্ত আয়াত সমূহকে হাত তোলার প্রমাণে পেশ করা হয়। অথচ আয়াত সমূহের কোথাও হাত তোলার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়নি। বরং সাধারণভাবে আল্লাহর নিকট প্রার্থনার কথা বলা হয়েছে। কোন মুফাসসিরই উক্ত আয়াতসমূহের তাফসীর করতে গিয়ে হাত তোলার কথা বলেননি। এমনকি এ সম্পর্কিত কোন হাদীছও দলীল হিসাবে সংযোজন করেননি। সুতরাং এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, উপরে বর্ণিত আয়াত সমূহ ফরয ছালাতের পর সম্মিলিতভাবে হাত তুলে দো‘আ করা প্রমাণ করে না। তাছাড়া হাত তুলে দো‘আ করার প্রমাণে অত্র আয়াতগুলি দলীল হিসাবে পেশ করা শরী‘আত বিকৃত করার নামান্তর মাত্র।
0 Comments: