বাংলাদেশে, সরকারি চাকরি থেকে অবসরপ্রাপ্ত বা মারা যাওয়া সরকারি কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যদের পারিবারিক পেনশন দেওয়া হয়। এই পেনশনের জন্য আবেদন করার সময়, আবেদনকারীদের স্বাক্ষর ও হাতের আঙ্গুলের ছাপ নমুনা জমা দিতে হয়।
পারিবারিক পেনশন: অবলম্বনের শক্ত মেরুদণ্ড। চাকুরীজীবনের শেষ দিনগুলো নিশ্চিন্তে পার করার অভিলাষ সবারই থাকে। সেসময় আর্থিক নিরাপত্তা বেজে দেয় সরকারি ক্ষেত্রের কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য পারিবারিক পেনশন। প্রিয়জন হারানোর শোককে কিছুটা লাঘব করে এই নিয়ম।
পারিবারিক পেনশন কি?
পারিবারিক পেনশন হলো একজন চাকরিজীবী বা পেনশনারের মৃত্যুর পর তার পরিবারের সদস্যদের প্রদান করা মাসিক আর্থিক সহায়তা। এই পেনশন মূলত চাকরিজীবী বা পেনশনারের অনুপস্থিতিতে তার পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তার জন্য প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশে পারিবারিক পেনশনের ইতিহাস
বাংলাদেশে পারিবারিক পেনশনের ধারণা প্রথম চালু হয় ব্রিটিশ আমলে। ১৯১১ সালে ব্রিটিশ সরকার বেঙ্গল পেনশনস অ্যাক্ট পাস করে। এই আইনের অধীনে, একজন চাকরিজীবীর মৃত্যুর পর তার পরিবারের সদস্যদের পেনশন প্রদানের বিধান করা হয়।
স্বাধীনতার পর, বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী (পেনশন) বিধিমালা জারি করে। এই বিধিমালায় পারিবারিক পেনশনের বিষয়টি আরও বিস্তারিতভাবে বলা হয়েছে।
পারিবারিক পেনশনের যোগ্যতা
বাংলাদেশে পারিবারিক পেনশনের যোগ্যতা নিম্নরূপ:
- চাকরিজীবী বা পেনশনার অবসর গ্রহণের আগে মৃত্যুবরণ করলে তার স্ত্রী, সন্তান, বাবা-মা এবং প্রতিবন্ধী ভাইবোন পারিবারিক পেনশনের জন্য যোগ্য।
- চাকরিজীবী বা পেনশনার অবসর গ্রহণের পর মৃত্যুবরণ করলে তার স্ত্রী, সন্তান এবং প্রতিবন্ধী ভাইবোন পারিবারিক পেনশনের জন্য যোগ্য।
পারিবারিক পেনশনের পরিমাণ
বাংলাদেশে পারিবারিক পেনশনের পরিমাণ চাকরিজীবী বা পেনশনারের বেতন এবং চাকরিকাল অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। সাধারণত, চাকরিজীবীর বেতনের ৫০% থেকে ৭৫% পর্যন্ত পারিবারিক পেনশন হিসেবে প্রদান করা হয়।
পারিবারিক পেনশনের আবেদন প্রক্রিয়া
বাংলাদেশে পারিবারিক পেনশনের জন্য আবেদন করতে হলে নিম্নলিখিত কাগজপত্র প্রয়োজন:
- চাকরিজীবী বা পেনশনারের মৃত্যুর সার্টিফিকেট
- চাকরিজীবী বা পেনশনারের চাকরির সার্টিফিকেট
- চাকরিজীবী বা পেনশনারের বেতন বিবরণী
- আবেদনকারীর জন্ম নিবন্ধন বা পাসপোর্ট
- আবেদনকারীর বিবাহের সার্টিফিকেট (যদি বিবাহিত হয়)
- আবেদনকারীর সন্তানদের জন্ম নিবন্ধন বা পাসপোর্ট
- আবেদনকারীর বাবা-মায়ের জন্ম নিবন্ধন বা পাসপোর্ট (যদি আবেদনকারীর বাবা-মা জীবিত থাকেন)
পারিবারিক পেনশনের জন্য আবেদন সংশ্লিষ্ট কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কাছে করা হয়।
পারিবারিক পেনশনের সুবিধা
পারিবারিক পেনশন চাকরিজীবী বা পেনশনারের মৃত্যুর পর তার পরিবারের সদস্যদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সহায়তা। এই পেনশনের মাধ্যমে চাকরিজীবী বা পেনশনারের পরিবার তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে পারে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান বজায় রাখতে পারে।
0 Comments: