তালাকের পর সন্তানদের লালনপালনের দায়িত্ব কার?

তালাকের পর সন্তানদের লালনপালনের দায়িত্ব কার? এই প্রশ্নটি অনেকের মনেই ঘুরপাক খায়। বিশেষ করে যখন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য তীব্র আকার ধারণ করে এবং বিবাহবিচ্ছেদের পথে পরিচালিত করে, তখন সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বেড়ে যায়।তালাকের পর সন্তানদের লালনপালনের দায়িত্ব কার?

এই প্রবন্ধে আমরা তালাকের পর সন্তানদের লালনপালনের দায়িত্ব কার, তা ইসলামী আইন ও বাংলাদেশের আইনের আলোকে আলোচনা করব।

ইসলামী আইন অনুযায়ী:

  • ৭ বছর বয়স পর্যন্ত: ছেলে সন্তান ৭ বছর বয়স পর্যন্ত তার মায়ের হেফাজতে থাকবে।
  • ৯ বছর বয়স পর্যন্ত: মেয়ে সন্তান ৯ বছর বয়স পর্যন্ত তার মায়ের হেফাজতে থাকবে।
  • ৭/৯ বছরের পর: ৭/৯ বছরের পর সন্তানদের হেফাজতের ব্যাপারে বিচারক সিদ্ধান্ত নেবেন।
  • ভরণপোষণের দায়িত্ব: সন্তানদের ভরণপোষণের দায়িত্ব সবসময়ই পিতার উপর বর্তায়।

বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী:

  • গার্ডিয়ানশিপ অ্যাক্ট, ১৮৯০: এই আইন অনুযায়ী, ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত সন্তানদের হেফাজতের অধিকার মায়ের।
  • বাংলাদেশের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৮৫:
    • মুসলিমদের ক্ষেত্রে, ইসলামী আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
    • হিন্দুদের ক্ষেত্রে, হিন্দু আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
  • মেজরিটি অ্যাক্ট, ১৮৭৫: এই আইন অনুযায়ী, ১৮ বছর বয়স পূর্ণ হলে সন্তান সাবালক হিসেবে গণ্য হবে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:

  • সন্তানদের লালনপালনের ব্যাপারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তাদের সুস্থ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা।
  • পিতা-মাতার উচিত তাদের মনোমালিন্য ভুলে সন্তানদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে সমানভাবে ভূমিকা রাখা।
  • আইনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো সন্তানদের প্রতি পিতা-মাতার ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ।


তালাকের পর সন্তানদের লালনপালনের দায়িত্ব কেবলমাত্র আইনের দিক থেকে বিবেচনা করা উচিত নয়। বরং সন্তানদের সুস্থ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্য পিতা-মাতার উচিত তাদের মনোমালিন্য ভুলে একসাথে কাজ করা।


0 Comments:

BDFile Telegram channel
BDFile Telegram channel